সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রহিমপুর খালপাড় এলাকায় এক কিশোরী মাদ্রাসার ছাত্রী নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতিত ছাত্রী কামাল বাজার আলিম মাদরাসার আলিম ১ম বর্ষে অধ্যায়নরত।
এ ঘটনায় ছাত্রীর মা হাজেরা বেগম বাদি হয়ে রহিমপুর খালপাড় গ্রামের মৃত আব্দুল খালিকের ছেলে সোলেমান (৩১), লোকমান মিয়া (৩৫), সুলতান মিয়া (২৫), আনোয়ার মিয়া (২২)-কে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সিলেটে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ১৭১/২০২০ইং।মামলা সূত্রে জানাজায় কামালবাজার আলিম মাদরাসার ছাত্রীকে দীর্ঘদিন যাবত ১নং আসামী সোলেমান উত্যক্ত করে আসছে। বিষয়টি বাদী কয়েকবার আসামীর আত্মীয়-স্বজনের নিকট বিচার প্রার্থী হলে তারা আপোষ নিস্পত্তি করে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার দুপুরে হাজেরা বেগম বাড়িতে না থাকায় ও বাড়ির লোকজন জুম্মার নামাজে গেলে এই সুযোগে আসামী বাড়িতে ডুকে। ওই সময় ভিকটিমের ছোট ভাই-বোন খেলাধুলায় ব্যাস্ত থাকায় ১নং আসামি মাদ্রাসার ছাত্রীকে ডেকে ঘর থেকে বের হওয়ার কথা বলে, তার কথা না শোনায় আসামি উত্তেজিত হয়ে ঘরে ডুকে ভিকটিমকে টানা হেচড়া করে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যেতে চাইলে ছাত্রী চিৎকার দিয়ে নিজেকে রক্ষা করতে চাইলে আসামী দস্তাদস্তির করে ভিকটিমের কাপড় খুলিয়া বিবস্ত্র করেেত থাকে। আসামীর অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে মুক্তির চেষ্টা করলে সে কিল ঘুষি মারিয়া মাটিতে ফেলে ওড়না দিয়ে তার মুখ বেধে কাঠের রুল দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে শ্লীলতাহানি করে প্রাণে মেরে ফেলার উদ্দেশ্য পাশ্ববর্তী পুকুর পারে ফেলে দেয়।
এ সময় ভিকটিমের ছোট ভাই-বোনের চিৎকার শোনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে ১নং আসামী অপর আসামীগণের সহযোগিতায় মাদাসা ছাত্রীকে সিএনজি যুগে নিয়ে যেতে চাইলে ঘটনাস্থলে বাদিনী ও মামলার সাক্ষীগণ তাকে উদ্ধার করার চেষ্টা করলে আসামীরা সবাইকে মৃত্যুর হুমকি দিয়ে ভিকটিমকে আপহরণ করে সিএনজি অটোরিকশা দিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় নিরুপায় হয়ে ভিকটিমের মা হাজেরা বেগম বিশ্বনাথ থানায় মামলা করতে যান। থানা থেকে এসে সন্ধ্যা ৭ টায় ঘরের বাহিরে গুরুতর মরণাপন্ন অবস্থা মাদরাসার ছাত্রী মেয়েকে পড়ে আছে দেখতে পান। সেখান থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করে সিলেট এম.এ.জিওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে ভিকটিম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, আসামীরা অসৎ, চরিত্রহীন,নারীলোভী,বখাটে এবং নারী নির্যাতনকারী প্রকৃতির লোক। তারা সর্বদা গ্রামের মেয়েদের সাথে ইভটিজিং করা তাদের নেশা ও পেশা। তাদের অনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য গ্রামের নিরীহ মেয়েরা স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় যেতে পারেন না। তাদের এহেন অনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য গ্রামের হিতৈষী মুরব্বিয়ান সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে দোষী সাব্যস্থ করে সর্তক করে দেন। বাদিনী ন্যায় সুবিচারের স্বার্থে মামলার আসামিদের গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনে প্রশাসনের প্রতি আকুল আবেদন জানান। এদিকে ভিকটিমের চাচা মৃত রুস্তম আলীর ছেলে আব্দুল লতিফ মামলার সাক্ষী হওয়ায় আসামীরা তাকে প্রতিনিয়ত অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও প্রকাশ্য প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে আসামীগণ তার জমির ধান সহ বিভিন্ন ভাবে ক্ষতি করতে উঠেপড়ে লেগেছে। গত ২৮ এপ্রিল মঙ্গল বার বিকেলে আব্দুল লতিফ এর বাড়ির পূর্বে কৃষি জমিতে লাউ ক্ষেত গরু দিয়ে খাওয়াইয়া ক্ষতি সাধন করেছে আসামীরা। বিষয়টি গ্রামের মুরব্বিয়ান ও স্থানীয় মেম্বর আব্দুল মতিনকে তিনি অবহিত করেছে।